Saturday 5 March 2016

Love

একটা কালো মধ্যবিত্ত ছেলের কখনো প্রেম
বা
ভালোবাসা হয় না।
.
যা হয় ভালোলাগা তা ও আবার এক পক্ষ থেকে।
.
যদি ছেলেটার শিক্ষাগত যোগ্যতা বা টাকা
থাকে
তখন হলেও হতে পারে ।
.
একটি কালো ছেলের প্রেম শুধু তামিল ছবি
গুলোতেই দেখা যায় । যা বাস্তবিক নয়।
.
একটা কালো ছেলে যখন তার হ্যান্ডসাম বন্ধুটির
সাথে রাস্তায় হেটে যায় তখন রিকশা করে
যাওয়া
মেয়েটি কালো ছেলেটার বন্ধুটির দিকে
তাকিয়ে
থাকে। তার দিকে ভুলবশত ও তাকায় না।
.
যখন তার কোন বন্ধু প্রেমিকার সাথে মোবাইলে
তার সামনে কথা বলে তখন মুখে সিগেরেট গুঁজে
দিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে যায়।
.
এছাড়া ও কালো মধ্যবিত্ত ছেলে গুলো ভয় পায়
তারা বলতে পারে না। কারন তারা নিজের
পরিবারের সম্মান টাকে বেশী গুরুত্ব
দেয়।
.
যখন ফেসবুকে ক্রাশ খাওয়া মেয়েটির রিলেশন
সিপ
স্ট্যাটাস দেখে তখন লাইক বাটনে চাপ দিয়ে।
কমেন্ট বক্সে গিয়ে থেমে থাকে।
খুব রাগ হয় তার নিজের উপর।
.
ভালোবাসা দিবস এলেই ছেলেটা কেমন চুপসে
যায়।
কারো সাথে আড্ডা দিতে পারেনা বন্ধুরা সবাই
তাদের জিএফ নিয়ে ব্যাস্ত।
.
কালো ছেলেটা রেললাইনে বসে থাকে
ফেসবুক
চালায়।
এবং টাইমলাইনে প্রেমিক - প্রেমিকাদের
লুলামি মার্কা স্ট্যাটাস
গুলো দেখে।
.
তারপর আবারো মুখে সিগারেট গুঁজে দেয়।
মধ্যবিত্ত কালো ছেলে গুলো খুব রাগী এবং খুব
অভিমান হয়ে থাকে।
.
খুব অল্পতেই অভিমান করে আবার খুব তাড়াতাড়ি
মিশেও যায়।
.
ছেলে গুলো সুন্দর না হলেও তাদের মন খুব
পবিত্র।
.
তারা ভাবে
এখন কার দিনের ভালোবাসা গুলি ও জানি
কেমন।
মেয়ে : এই তুমি মেয়ে টার প্রোফিকে লাইক
দিছো
কেন?
ছেলে : এই তুমি ছেলেটার পিকে কমেন্ট
করছো
কেন।।
ভালোবাসা গুলো লাইক কমেন্টের মতো হয়ে
গেছে।
.
এখনকার প্রেমিকাদের প্রধান খাদ্য আইস্ক্রিম
এবং
ফুচকা। আর প্রেমিকের প্রেমিকার ঠোটে কিস
দেওয়া ।
.
মায়ের তৈরি রান্না করা খাবার গুলো টেবিলে
পরে থাকে।
আজ নাকি ভালোবাসা দিবস ছেলের জন্য ভালো
কিছু রাঁধবো ।
মায়ের মনে কথা গুলো লুকিচুরি খেলে কিন্তু
ছেলের
দেখা নেই ছেলে প্রেমিকা নিয়ে ব্যাস্ত।
.
কিন্ত মধ্যবিত্ত কালো ছেলেগুলী ব্যাতিক্রম
তারা
ভালোবাসা দিবসের দিন পরিবারের সাথে
কাটাতে ভালোবাসে।
তাদের কাছে ভালোবাসা খেলা নয়

ভালোবাসা তাদের কাছে অনেক কিছু।
ভালোবাসা তাদের লিটনের ফ্ল্যাটে রাত
কাটানো শেখায় না।
ভালোবাসা তো এক অজানা অনুভুতি।

Sunday 28 February 2016

হায় রে প্রেম

হায় রে প্রেম"
ধরুন,আপনি
মধ্যবিত্ত ঘরের
ছেলে,Class 10 এ পড়েন।
যদি আপনি class 9 এর
কোন
মেয়েকে
"" I Love You "" বলেন,
তাহলে সে
মেয়ে
আপনাকে নির্ঘাত
বলবে,
"হারামজাদা,
ইয়ার্কি মারার জায়গা পাইস না।
যা,দূরে গিয়া মর।"
আবার , যদি Class 7-8
এর কোন
মেয়েকে
"" I Love You "" বলেন।

Wednesday 10 February 2016

এখনো সময় আছে

গল্পের নামঃ এখনো সময় আছে।
.
- দোস্ত তোর এত বছরের কষ্ট আজ সফল হয়েছে। (শান্ত)
~ মানে? (রিয়াদ)
- তুই এতদিন যে বিষয় নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করেছিস। আজ তার ফলাফল বের হয়েছে। তুই সেই বিষয়ের উপর পিএইচডি করেছিস।
~ তোর মাথা ঠিক আছে? আমি তো এমন কোনো পরীক্ষা দেই নাই।
.
- গতকাল তুই যে ব্লাড টেস্ট করিয়েছিলি। এই নে তার রিপোর্ট।

.
শান্ত রিয়াদের হাতে রিপোর্ট কার্ড দিল। রিয়াদ রিপোর্ট কার্ড খুলে অবাক হয়ে যায়। নিজ চোখে দেখেও বিশ্বাস করতে পারছে না।
.
~ দেখেছিস, তোর এতদিনের কষ্ট আজ সফল হয়েছে।
- আমার ক্যান্সার হয়েছে। আর তুই ফান করছিস? (অশ্রু চোখে বলল)
~ আজব তো! আমি ফান করলাম কোথায়? আমি তো তোর সফলতায় খুশি।
- কিসের সফলতা? আমার ক্যান্সার হয়েছে। ক্যান্সার ক্যান্সার ক্যান্সার। তুই কি বুঝিস না ক্যান্সার মানে কি? ক্যান্সার মানে মৃত্যু।
.
- আরে তুই কান্না করছিস কেন? এতো সুখের খবর। এত বছর ধরে তুই দিনরাত পরিশ্রম করে সময়মতো সিগারেট, মদ গাজা আফিং খেয়েছিস। এটা তো তারই ফল, তাই না?
.
রিয়াদ শান্তর দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
.
- কিরে তুই খুশি না?
~ (নিশ্চুপ)
- শুন, এত বছর নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তুই শুনিস নায়। আজ কান্না করছিস কেন? আজ তো হাসির দিন। তোর এত বছরের কষ্টের ফল আজ তোর হাতে।
.
রিয়াদ নিশ্চুপ হয়ে আছে। এখন কি করবে তাই ভাবছে। তার পরিবারকে কিভাবে জানাবে কথাটা? সিফাকেও(স্ত্রী) কিভাবে বলবে? কথাটা সিফা জানলে মরেই যাবে।
.
রিয়াদ চোখ মুছে বলল
~ দোস্ত এই কথাটা আর কাউকে বলিস না।
- আরে বেটা সুখের খবর লুকিয়ে রাখতে নেই। আমি অলরেডি তোর পরিবারের সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি।
~ কি!
- হ্যাঁ।
.
রিয়াদ শান্তকে থাপ্পড় মেরে বাসায় দৌড় দিল। আল্লাহই জানে বাবা মা ও সিফার কি অবস্থা!
.
রিয়াদ বাসায় এসে দেখল সবাই গোমরামুখো হয়ে বসে আছে। রিয়াদের আম্মু কেঁদে কেঁদে অস্থির। রিয়াদ যেয়ে তার আম্মুর কাছে বসলো। রিয়াদের আম্মু রিয়াদকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল।
.
রিয়াদ অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে থামালো।
.
= বাবা ভেতরে যা। বউমা …… (বলতে পারল না মুখ চেপে কান্না শুরু করল।)
.
রিয়াদ ভেতরে গেল। সিফা কান্না করতে করতে ঘেমে গেছে। চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। রিয়াদ সিফার পাশে বসতেই সিফা রিয়াদকে জড়িয়ে ধরল।
.
> এমন কেন হল? এখন আমার কি হবে? আমি তো তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। (কেঁদে কেঁদে)
~ দেখ তুমি কান্না থামাও। আমার কিচ্ছু হবে না। আমি বড় বড় ডাক্তার দেখাব। (মিথ্যা সান্তনা কারণ রিপোর্টে লিখাই আছে লাস্ট স্টেজ। বাঁচানো সম্ভব না।)
.
> আমাদের বাবুটার কি হবে? ওর সাথে কে খেলা করবে? ও কাকে বাবা বলে ডাকবে? (কেঁদে কেঁদে)
.
কথাটা শুনে রিয়াদের মুখে একটু হাসি ফুটলো।
.
~ সত্যিই বলছ? আমি বাবা হতে চলেছি?
.
সিফা রিয়াদের বুকে মাথা গুজে দিয়ে কাঁদতে লাগল। রিয়াদের বুকে মোচড় দিয়ে উঠল। তার নিজের পরিবারটা সম্পূর্ণ হতেই যাচ্ছিল কিন্তু সে এই পরিবারটাকে অসম্পূর্ণ রেখে চলে যাবে। কথাটা ভাবতেই রিয়াদের চোখে বেয়ে অশ্রু পড়ে গেল।
.
> তোমাকে কত মানা করেছিলাম এসব ছেড়ে দাও। কিন্তু ছাড়লে না। পরিণামে আজ এটা হল। (কান্না জড়িত কণ্ঠে)
.
রিয়াদ সিফাকে জড়িয়ে ধরল। আজ কেন যেন রিয়াদের ইচ্ছে করছে সিফাকে জড়িয়ে রাখতে। আজ রিয়াদ বাঁচতে চাচ্ছে। আজ রিয়াদ বাঁচতে চাচ্ছে তার নবাগত সন্তানকে দেখার জন্য। আজ রিয়াদ বাঁচতে চাচ্ছে তার পরিবারের জন্য। কিন্তু ক্যান্সার নামক মরণব্যাধি রিয়াদকে বাঁচতে দিবে না।
.
আজ রিয়াদের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে? আর কেউ না‚ রিয়াদ নিজেই।
.
রিয়াদ অশ্রুজলে বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। সম্পূর্ণ ঘর স্তব্ধ হয়ে আছে। মৃত্যুর আগেই যেন মরণ যন্ত্রণা তাকে মেরে ফেলছে। যে রিয়াদ প্রতি ঘন্টায় একটা সিগারেট খেত। আজ সেই রিয়াদ তিন ঘন্টা ধরে সিগারেটে হাতও দেয়নি। কিন্তু এখন মাদক থেকে দূরে থেকে কি হবে? ক্যান্সার তো হয়েই গেছে।
.
শান্ত রিয়াদের বাসায় আসলো। শান্তকে দেখে রিয়াদ বলল
~ স্যরি দোস্ত। তোকে তখন মারাটা ঠিক হয়নি।
- আরে ও কিছু না। তো এখন কেমন আছিস?
.
রিয়াদ শান্তকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলল
~ জানিস, আমি বাবা হতে চলেছি। কিন্তু আমি আমার আদরের সন্তানকে দেখতে পারব না। ওকে কোলে নিতে পারব না। ওকে আঙ্গুল ধরে হাটা শিখাতে পারব না। ওর মুখে বাবা ডাক শুনতে পারব না। ওর সাথে খেলতে পারব। এসব কিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ার জন্য আমি নিজেই দায়ী। (কান্না জড়িত কণ্ঠে)
.
- প্লিজ দোস্ত কাদিস না। তোকে আগে কত মানা করেছিলাম। তবুও তুই কথা শুনিসনি।
~ হ্যাঁ রে তখন যদি তোদের কথা শুনতাম। তবে আজ আমি বাবা হব খবরটা শুনে আনন্দে ভাসতাম। আমার পরিবারের সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করার নতুন স্বপ্ন দেখতাম।
- তুই চাইলে এখনো সম্ভব।
.
~ নারে। রিপোর্টে লিখাই আছে লাস্ট স্টেজ।
- একটা কথা বলি মারবি না তো?
~ নারে মারব না। যা ইচ্ছে বল।
.
শান্ত রিয়াদ থেকে কিছুটা দূরে যেয়ে বলল, "ঐ রিপোর্টটা বানানো রিপোর্ট। তোর কিছু হয়নি। আর এসব কিছুই নাটক। শুধুমাত্র তোকে সঠিক রাস্তায় আনার জন্য।"
.
রিয়াদ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। রিয়াদ সিফার দিকে তাকালো। সিফা মিটমিট করে হাসছে। রিয়াদের মন হলো তার বুক থেকে বড় একটা পাথর নেমে গেছে।
.
সিফা রিয়াদের কাছে এসে বলল
> আমরা এসব কিছু করেছি শুধুমাত্র তোমার জন্য। প্লিজ এসব ছেড়ে দাও।
.
রিয়াদ সিফাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল। শান্ত অন্য রুমে চলে গেল।
.
রিয়াদ সিফাকে বলল
- আমি আর কখনোই মদ গাজা সিগারেটে হাত দিব না।
সিফাও জড়িয়ে ধরল।
- আচ্ছা আমাদের বাবুটার খবর কি সত্য?
সিফা রিয়াদের বুকে নিজেকে লুকিয়ে দিল। রিয়াদ বুঝতে পারল এই সাজানো ঘটনার মধ্যে বাবুর ঘটনাটাই সত্য।
.
রিয়াদ তো বেঁচে গেল। সময় থাকতে আপনিও সাবধান হয়ে যান। নিজের সন্তান পরিবার পরিজনের কথা চিন্তা করে মাদক থেকে দূরে থাকুন। নিজে দূরে থাকুন এবং অন্যদেরকেও দূরে রাখুন। আপনারও তো নৈতিক দায়িত্ব আপনার বন্ধুকে এসব থেকে দূরে রাখার।
.
ভাল থাকুন। সুস্থ্য থাকুন। অন্যকেও ভাল এবং সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন।
ধন্যবাদ

Friday 29 January 2016

শান্তিতে ঘুমাতে চাই

আজকের পর থেকে আর আমাকে
রাত জাগতে হবেনা। দীর্ঘ চার
বছরের রাত জাগাকে বিদায়
জানিয়ে আমি সবার কাছ থেকে
ছুটি নিয়ে নিবো। জানি অনেক
কেই আমি missed করবো। কিন্তু আমি
আর পারছিনা..... pacman emoticon
এখন একটু শান্তিতে ঘুমাতে চাই,
প্রতিটা রাত।

ভুল

যখন তুমি কোন ভুল করে ফেল, তখন এর
পিছনে বেশি সময় ব্যায় করো না।
ভুলের পিছনের কারণগুলোকে
মনের মধ্যে গেঁথে নাও এবং
সামনে তাকাও। ভুল তোমাকে
শিক্ষা দেয় জ্ঞানী হয়ে উঠতে।
অতীতকে বদলানো যায় না, কিন্তু
ভবিষ্যৎ অনেকাংশেই তোমার
ক্ষমতার মধ্যে।
-হিউ হোয়াইট





**************************************************************************************************



পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হলো,
কাউকে হাসতে দেখা।
তার চেয়েও ভালো লাগবে,
যদি আমি জানতে পারি,
আমার কারণেই একজনের মুখে
হাসি ফুটে উঠেছে।

সুখ

************★সুখ★*************
সুন্দর চেহারা নয়........একজন সুন্দর মনের......... কলো মানুষ ও আপনার জীবনে সুখ বয়ে আনতে পারে.......। তাই শুধু শুধু ......সুন্দর মানুষের পিছু না দৌড়ে ........একজন ভালো মনের........ কালো মানুষের সঙ্গ নেন ..........।হয়ত জীবনে সুখী হতে পারবেন।.....................................................(হূমায়ূন আহমেদ )

Sunday 24 January 2016

জয়ী নই, পরাজিত নই


জয়ী নই, পরাজিত নই
– সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

পাহাড়-চুড়ায় দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিল
আমি এই পৃথিবীকে পদতলে রেখেছি
এই আক্ষরিক সত্যের কছে যুক্তি মূর্ছা যায়।
শিহরিত নির্জনতার মধ্যে বুক টন্‌‌টন করে ওঠে
হাল্‌কা মেঘের উপচ্ছায়ায় একটি ম্লান দিন
সবুজকে ধূসর হতে ডাকে
আ-দিগন্ত প্রান্তের ও টুকরো ছড়ানো টিলার উপর দিয়ে
ভেসে যায় অনৈতিহাসিক হাওয়া
অরণ্য আনে না কোনো কস্তুরীর ঘ্রাণ
কিছু নিচে ছুটন্ত মহিলার গোলাপি রুমাল উড়ে গিয়ে পড়ে
ফণমনসার ঝোপে
নিঃশব্দ পায়ে চলে যায় খরগোশ আর রোদ্দুর।

এই যে মুহূর্তে, এই যে দাঁড়িয়ে থাকা–এ‌র কোনো অর্থ নেই
ঝর্নার জলে ভেসে যায় সম্রাটের শিরস্ত্রাণ
কমলার কোয়া থেকে খসে পড়া বীজ ঢুকে পড়ে পাতাল গর্ভে
পোল্‌কা ডট্‌ দুটি প্রজাপতি তাদের আপন আপন কাজে ব্যস্ত
বাব্‌‌লা গাছের শুক্‌নো কাঁটাও দাবী করেছে প্রকৃতির প্রতিনিধিত্ব।
সব দৃশ্যই এমন নিরপেক্ষ
আমি জয়ী নই, আমি পরাজিত নই, আমি এমনই একজন মানুষ
পাহাড় চূড়ায় পৃথিবীকে পদতলে রেখে, আমার নাভিমূল
থেকে উঠে আসে বিষণ্ন, ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস
এই নির্জনতাই আমার ক্ষমাপ্রার্থী অশ্রুমোচনের মুহূর্ত।।

সাহস থেকে প্রেম


 সাহস থেকে প্রেম
-নির্মলেন্দু গুন

আমার শুধু ইচ্ছে করে
সঙ্গে বসে থাকি ।
হঠাৎ করে তোমার গায়ে
গোপনে হাত রাখি ।

রাখতে রাখতে সাহস হবে
সাহস থেকে প্রেম,
বুঝবে আমি শিকড়গুলো
কিভাবে ছড়ালেম ।

আমার শুধু ইচ্ছে করে
সঙ্গে ভেসে যেতে,
ভাসতে ভাসতে সবটা নদী
বুকের কাছে পেতে ।

এমনি করেই সাহস হবে
সাহস থেকে প্রেম,
তখন তুমি বুঝবে না যে
কিভাবে জড়ালেম ।

মন ভালো নেই


 মন ভালো নেই
 – STC_AZAD

বিষাদ ছুঁয়েছে আজ, মন ভালো নেই,
মন ভালো নেই;
ফাঁকা রাস্তা, শূন্য বারান্দা
সারাদিন ডাকি সাড়া নেই,
একবার ফিরেও চায় না কেউ
পথ ভুলকরে চলে যায়, এদিকে আসে না
আমি কি সহস্র সহস্র বর্ষ এভাবে
তাকিয়ে থাকবো শূন্যতার দিকে?
এই শূন্য ঘরে, এই নির্বসনে
কতোকাল, আর কতোকাল!
আজ দুঃখ ছুঁয়েছে ঘরবাড়ি,
উদ্যানে উঠেচে ক্যাকটাস্ত
কেউ নেই, কড়া নাড়ার মতো কেউ নেই,
শুধু শূন্যতার এই দীর্ঘশ্বাস, এই দীর্ঘ পদধ্বনি।
টেলিফোন ঘোরাতে ঘোরাতে আমি ক্লান্ত
ডাকতে ডাকতে একশেষ;
কেউ ডাক শোনে না, কেউ ফিরে তাকায় না
এই হিমঘরে ভাঙা চেয়ারে একা বসে আছি।
এ কী শান্তি তুমি আমাকে দিচ্ছো ঈশ্বর,
এভাবে দগ্ধ হওয়ার নাম কি বেঁচে থাকা!
তবু মানুষ বেঁচে থাকতে চায়, আমি বেঁচে থাকতে চাই
আমি ভালোবাসতে চাই, পাগলের মতো
ভালোবাসতে চাই-
এই কি আমার অপরাধ!
আজ বিষাদ ছুঁয়েছে বুক, বিষাদ ছুঁয়েছে বুক
মন ভালো নেই, মন ভালো নেই;
তোমার আসার কথা ছিলো, তোমার যাওয়ার
কথা ছিল-
আসা-যাওয়ার পথের ধারে
ফুল ফোটানো কথা ছিলো
সেসব কিছুই হলো না, কিছুই হলো না;
আমার ভেতরে শুধু এক কোটি বছর ধরে অশ্রুপাত
শুধু হাহাকার
শুধু শূন্যতা, শূন্যতা।
তোমার শূন্য পথের দিকে তাকাতে তাকাতে
দুই চোখ অন্ধ হয়ে গেলো,
সব নদীপথ বন্ধ হলো, তোমার সময় হলো না-
আজ সারাদিন বিষাদপর্ব, সারাদিন তুষারপাত-
মন ভালো নেই, মন ভালো নেই।

আমি তোমার নাম জানিনা


আমি তোমার নাম জানিনা
দেখলে চিনি ।
এখন আমি কোথায়
গিয়ে খুঁজবো তোমায়?
খুঁজতে খুঁজতে কোথায় যাবো?
সিরামিকের গাছগাছালি
ইটের ঝাউবনের ভেতর
কোথায় আমিখুঁজবো তোমায়?
কোথায় তোমার সৌম সকাল, শান্ত
দূপুর ?
কোথায় তোমার মুখর বিকেল,
একাকী রাত?
খুঁজবো কোথায়- ঝরা পাতায়
সাজানো ঘাস
সন্ধা বেলায়? কোথায় খুঁজবো?
এই যে আমি খুঁজছি তোমায়- কিন্তু
কেন??
— রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

নিঃসঙ্গতা


নিঃসঙ্গতা
-আবুল হাসান
অতোটুকু চায় নি বালিকা!
অতো শোভা, অতো স্বাধীনতা!
চেয়েছিলো আরো কিছু কম,
আয়নার দাঁড়ে দেহ মেলে দিয়ে
বসে থাকা সবটা দুপুর, চেয়েছিলো
মা বকুক, বাবা তার বেদনা দেখুক!

অতোটুকু চায় নি বালিকা!
অতো হৈ রৈ লোক, অতো ভিড়, অতো সমাগম!
চেয়েছিলো আরো কিছু কম!
একটি জলের খনি
তাকে দিক তৃষ্ণা এখনি, চেয়েছিলো
একটি পুরুষ তাকে বলুক রমণী!

এমন যদি হতো


"এমন যদি হতো"
___STC_AZAD

এমন যদি হতো
ইচ্ছে হলে আমি হতাম
প্রজাপতির মতো
নানান রঙের ফুলের পরে
বসে যেতাম চুপটি করে
খেয়াল মতো নানান ফুলের
সুবাস নিতাম কতো ।
এমন হতো যদি
পাখি হয়ে পেরিয়ে যেতাম
কত পাহাড় নদী
দেশ বিদেশের অবাক ছবি
এক পলকের দেখে সবই
সাতটি সাগর পাড়ি দিতাম
উড়ে নিরবধি ।
এমন যদি হয়
আমায় দেখে এই পৃথিবীর
সবাই পেতো ভয়
মন্দটাকে ধ্বংস করে
ভালোয় দিতাম জগৎ ভরে
খুশির জোয়ার বইয়ে দিতাম
এই দুনিয়াময় ।
এমন হবে কি ?
একটি লাফে হঠাৎ আমি
চাঁদে পৌঁছেছি !
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে
দেখে শুনে ভালো করে
লক্ষ যুগের অন্ত আদি
জানতে ছুটেছি ।

স্মৃতি

 স্মৃতি
 .....STC_AZAD

সে আসে আমার কাছে ঘুরে ঘুরে যেন এক
স্রোতস্বিনী নদীর সুবাস,
ভালোবাসা সে যেন হৃদয়ে শুধু
ঘুরে ঘুরে কথা কয়, চোখের ভিতর হতে সুগভীর চোখের ভিতরে,
সে আসে প্রতিদিন জানালায় ভোরের রোদের মতো


বাহুলগ্ন আমার প্রেমিকা;

সে আসে প্রত্যহ এই আলোকিত উজ্জ্বল শহরে, ইতিহাস
আরো সব কিংবদন্তী কথা কয় আমার স্মৃতিতে, সে আসে
দূর থেকে মনে হয় শ্যামল ছায়ায় ভরা যেন এক
হরিণীর চোখ, অথবা রোদের সুরভিমাখা হেমন্তের শিশির সকাল
সে আসে আমার কাছে নুয়ে পড়ে আমলকী বন;
সে আসে আমার কাছে ভরে ওঠে বছরের শূন্য খামার
নদীতে সহসা ওড়ে মাছরঙ নায়ের বাদাম
ক্ষেতের দরাজ দেহ সিক্ত করে মেঘের মৈথুন,
সে আসে আমার কাছে
ফুটে ওঠে নিসর্গের নিবিড় কদম
সে আসে আমার কাছে ঘুরে ঘুরে নদীর স্রোতের মতো
জলে-ভাসা ভেলা।

বেঁচে আছি এই তো আনন্দ


 বেঁচে আছি এই তো আনন্দ
                                -------------STC_AZAD
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ,
এই আনন্দের জন্য আমি
সবকিছু মাথা পেতে নেবো,
যে কোনো দুঃখ, যে কোনো শাস্তি--
শুধু এই ভোরের একটু আলো দ্যাখার জন্য
আমি পথের ভিক্ষুক হতে রাজি।
এই যে গোলাপ ফুলটির দিকে যতোক্ষণ খুশি
তাকিয়ে থাকতে পারি
এই সুখে আমি হাসিমুখে সব দুঃখ
মাথা পেতে নেবো।
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দের কাছে
কোনো দুঃখই কিছু নয়
এই নির্বাসন, এই শাস্তি,
এই দ্বীপান্তর;
এই মেঘ, এই ঝুম বৃষ্টি, এই শিশিরের শব্দের জন্য
আমি সহস্র বছরের কারাদন্ড মাথায় নিয়েও
বেঁচে থাকতে চাই।
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দে সব
আঘাত আমি মাথা পেতে নেবো।